সোনাইমুড়ীতে নির্বাচন অফিসের সামনেই মেম্বার প্রার্থীর উপর হামলা
সোনাইমুড়ী প্রতিনিধি: সোনাইমুড়ীতে নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্ধকে কেন্দ্র করে লিভারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) সমর্থিত মেম্বার প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুনের উপর প্রতিপক্ষ আওয়ামীলীগের প্রার্থী নুরুল ইসলাম ভুঁইয়ার সন্ত্রাসী বাহিনী খোদ নির্বাচন অফিসের সামনেই হামলা চালিয়েছে। সন্ত্রাসীদের চুরিকাঘাতে গুরুত্বর আহত মামুনকে স্থানীয় জনতা উদ্ধার করে সোনাইমুড়ী অল স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করে। সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা নির্বাচন অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এলডিপি সমর্থিত প্রার্থী মামুন তার মনোনয়ন পত্রে মোরগ প্রতীকের জন্য আবেদন করেন। পক্ষান্তরে প্রতিপক্ষ আওয়ামীলীগ প্রার্থী নুরুল ইসলাম ভুঁইয়াও মোরগ প্রতীক চেয়ে আবেদন করেন। গতকাল সোমবার প্রতীক বরাদ্ধের দিন ধার্য থাকায় মামুন নির্বাচন অফিসে আসার পূর্বেই প্রতিপক্ষ নুর ইসলাম ভুঁইয়া তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে নির্বাচন অফিসে প্রবেশ করেন। এসময় মামুনের স্বাক্ষর করা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের একটি আবেদন নির্বাচন কর্মকর্তাকে দেন এবং নিজেকে একক প্রার্থী দাবী করেন। এসময় দেওটি ইউপির দায়িত্বে থাকা নির্বাচন অফিসার শহিদুল ইসলাম কর্তৃক নুরুল ইসলামকে একক প্রার্থী হিসেবে মোরগ প্রতীক বরাদ্ধ দেয়। প্রতীক নিয়ে নির্বাচন অফিস থেকে বের হলে অফিসের সামনেই এলডিপি প্রার্থী মামুনের মুখোমুখি হয়। এসময় মামুন তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নাই বলে চ্যালেঞ্জ করে নির্বাচন অফিসারের সহযোগীতা চান। মামুন আরো জানায়, প্রত্যাহারের আবেদনে তার স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে। কিন্তু উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তাৎক্ষনিক সিদ্ধান্ত দিতে না পারায় মুঠোফোনে নোয়াখালী জেলা নির্বাচন অফিসারের সহযোগীতা চান। পরবর্তীতে জেলা নির্বাচন অফিসারের হস্তক্ষেপে জাল স্বাক্ষর করা আবেদনটি বাতিল পূর্বক প্রার্থীতা পূনঃবহাল করে মামুনকে ফুটবল প্রতীক বরাদ্ধ দেয়। প্রতীক নিয়ে নির্বাচন অফিস থেকে বের হয়ে আসলে অফিসের সামনে অবস্থানরত এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী দাউদ, নুরল ইসলাম ভুঁইয়ার ছেলে ঢাকা পল্টন থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফিরোজ ভুঁইয়া সবুজসহ একাধিক সন্ত্রাসী বাহিনী মামুন ও তার লোকজনের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় সন্ত্রাসীদের লাঠি ও ছোরার আঘাতে ৪/৫ জন আহত হয়। মামুন সন্ত্রাসীদের কবল থেকে তাদের উদ্ধার করতে গেলে তার সাথে থাকা গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সন্ত্রাসীরা ছিনিয়ে নেয় এবং তাকেও ছুরিকাঘাত করে। সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে মামুনের ডান পায়ের উরুতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। এসময় উপস্থিত জনতা তাকে উদ্ধার করে সোনাইমুড়ী অল স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করায়। ঘটনার ২ ঘন্টা পর হাসপাতালে গিয়ে মামুনের সাথে কথা বলে জানা যায়, নমিনেশন পেপার দাখিলের পর থেকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার জন্য একাধিকবার আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। সেই মোতাবেক আজও তারা আমার স্বাক্ষর জাল করে নমিনেশনের প্রত্যাহারের আবেদন জমা দেয়। আমি অফিসে গিয়ে জাল স্বাক্ষরের প্রমাণসহ উপজেলা নির্বাচন অফিসারের সহযোগীতা চাই। তিনি ঘটনার সত্যতা যাচাই করে আমাকে নির্বাচন করার জন্য ফুটবল প্রতীক বরাদ্ধ দেন। প্রতীক নিয়ে বের হওয়ার পরেই অফিসের সামনে তারা আমার ও আমার লোকজনের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।
এ বিষয়ে থানা প্রশাসনের নিকট কোন অভিযোগ করছেন কিনা জানতে চাইলে মামুন বলেন, আমার সহোদর আবদুল মতিন সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে সোনাইমুড়ী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিতে চাইলে থানা পুলিশ অপারগতা প্রকাশ করে এবং বলে এরা ক্ষমতাশীল দলের লোক, এদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেয়া যাবেনা বলে সাফ জানিয়ে দেয়।
এ বিষয়ে সোনাইমুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ন কবিরের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ২/১টি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটতেই পারে। সব বিষয়ে অভিযোগ নিতে হবে এমন কথা নয়।