নোয়াখালীতে সরকারী ওয়ারলেস ও মোবাইল সেট নিয়ে আত্মগোপনে পুলিশ পরিদর্শক মজিদ, সাময়িক বরখাস্ত
প্রতিনিধি: নোয়াখালীতে সরকারী ওয়ারলেস ও মোবাইল সেট নিয়ে আত্মগোপনে যাওয়া পুলিশ কর্মকর্তা ডি.এস.বি পরিদর্শক (ডি.আই-১) আবদুল মজিদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে পুলিশ সদর দপ্তর বুধবার বিকালে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে খুলনা রেঞ্জে সংযুক্ত করে। এক কলেজ ছাত্রীর সাথে অনৈতিক কাজে জড়িত থাকার বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দল নোয়াখালীতে আসছেন এমন সংবাদ পেয়ে মঙ্গলবার রাত ১১ টার দিকে তিনি আত্মগোপন করেন। বর্তমানে তার হাতে থাকা সরকারি ওয়ারলেস (চার্লি ডেল্টা-১) ও সরকারি মোবাইল (০১৭১৩৩৭৩৭৪৭) সংযোগগুলো বন্ধ রয়েছে। তার স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানায় সরেজমিন পুলিশ গিয়ে তাকে খুঁজে পায়নি। এই রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত বৃহস্পতিাবর রাত ৮ টায় আবদুল মজিদ খুলনা রেঞ্জে যোগদান করেননি এবং নোয়াখালী পুলিশের সাথেও কোন প্রকার যোগাযোগ রাখেননি।
সূত্র জানান, পুলিশ পরিদর্শক আবদুল মজিদের স্ত্রী ও সন্তানরা চট্টগ্রামে বসবাস করে। তিনি নোয়াখালী সরকারি কলেজ সড়কের ফাল্গুনি ভিলায় বেচালার থাকতেন। এখানে একা থাকার সুযোগে এক কলেজ ছাত্রীর (১৯) সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ সম্পর্কের কথা ঐ ছাত্রীর পরিবার জানতে পারলে তারা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের পেক্ষিতে মজিদের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে প্রশাসন। সেই তদন্ত টিম আজ-কালের মধ্যে নোয়াখালীতে আসছেন এমন খবর শুনেই মঙ্গলবার রাত ১১টার পর তিনি সরকারী ওয়ারলেস ও মোবাইল সেট নিয়ে নোয়াখালী থেকে আত্মগোপন করেন। এর পর থেকেই সরকারী দুটি সংযোগেই বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি নোয়াখালী জেলা পুলিশ উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে তার বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়।
এদিকে বক্তব্য নিতে এই প্রতিবেদকও আবদুল মজিদের মোবাইলে একাধিকবার কল করলে তা বন্ধা পাওয়া যায়।
বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় এ ব্যাপারে নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো: আলমগীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠার পর তিনি আমাদের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। আমরা তাকে কল করলেও তিনি ধরেননি। এক পর্যায়ে মোবাইল বন্ধ হয়ে যায়। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তিনি যদি আত্মগোপন করেন তাহলে বিষয়টি কি তা সহজেই অনুমেয় বলে উল্লেখ করেন পুলিশ সুপার আলমগীর।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি আবদুল মজিদ পরিদর্শক ডিএসবির (ডি.আই-১) হিসেবে নোয়াখালীতে যোগদান করেছিলেন। জাতীয় নির্বাচনের আগমূহুর্তে বিগত ১৫ ডিসেম্বর ১৮ইং সোনাইমুড়ি থানার ওসি থাকা কালে মজিদ সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির সাংসদ প্রার্থী ব্যারিষ্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে গুলি করে বিতর্কের জম্ম দেন। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি হলে সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে তাকে জেলা পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়। নোয়াখালীর সাবেক এসপি ইলিয়াছ শরীফ বদলি হয়ে যাওয়ার সময় ওসি আবদুল মজিদকে ডিএসবি ওসি হিসাবে পদায়ন করেন। চাকরী জীবনে আবদুল মজিদ নানা অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন। সর্বশেষ কলেজ ছাত্রীর সাথে অনৈতিক কর্মে জড়িয়ে সরকারী চাকরী হারানোর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।