বেগমগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে মোবাইলে ডকে নিয়ে যুবককে বর্বর নির্যাতন
ক্রাইম রিপোর্টার: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার কাদিরপুর ইউনিয়নের ইয়ারপুর গ্রামের অলী উল্যাহর নতুন মিজি বাড়িতে পূর্ব শত্রুতার জেরে মোবাইলে ডেকে নিয়ে মো: সুমন(৩৩) নামের এক যুবককে বর্বর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, নির্যাতনের পর মিথ্যা ধর্ষণের চেষ্টার মামলা দিয়ে ওই যুবককে জেলও খাটাচ্ছে অভিযুক্তরা। নির্যাতনের শিকার সুমন আবদুল হক মুন্সি মেম্বার বাড়ির মৃত আবদুল হক মুন্সির পুত্র। এ নিয়ে এলাকায় বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, সুমনদের সাথে অলী উল্যাহর নতুন মিজি বাড়ির ইব্রাহিমদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। এর জের ধরে গত ৮ আগষ্ট রাত ৯ টার দিকে কথা আছে বলে সুমনকে ঢেকে নেয় ইব্রাহিম। এর পর তাকে ঘরের ভেতর আটক করে মধ্যযুগিয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে সুমনের সারা শরীর ক্ষত-বিক্ষত করে দেয়া হয়। রাত ভর নির্যাতন শেষে সকালে মূমূর্ষ অবস্থায় তাকে ঘরের বাইরে দেখে দেয়। খবর পেয়ে সুমনের স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে অবস্থা গুরুতর দেখে ডাক্তাররা তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরন করে। এ ঘটনায় সুমনের ভাই সুজন বাদী হয়ে ইব্রাহিম, ইব্রাহিমের স্ত্রী ঝর্না আক্তার, ইব্রাহিমের ভাই সোহাগ, ইব্রাহিমের পিতা হারুন উর রশিদ, ইব্রাহিমের ছোট ভাই আবদুল হাদির স্ত্রী তাজ নাহার বেগমসহ অজ্ঞাত আরো ৩-৪ জনকে আসামী করে বেগগমগঞ্জ মডেল থানায় মামলা (যার নং-৩০, তাং-১৭-৮-১৯ইং) দায়ের করে। । থানার এস.আই রাকিবুল হাসান মামালাটি তদন্ত করছে। কিন্তু তিনি মামলার কোন আসামীকে এখানো গ্রেফতার করতে পারেননি।
এদিকে সুমনকে নির্যাতনের ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিতে ইব্রাহিম তার ছোট ভাই আবদুল হাদির স্ত্রী তাজ নাহার বেগমকে দিয়ে সুমনের বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষনের চেষ্টার মামলা (নং-২৪, তাং-১০-৮-১৯ইং) দায়ের করেছে বলে অভিযোগ করেছেন সুমনের পরিবারের সদস্যরা ও এলাকাবাসী। এই মামলাটি তদন্ত করছেন থানার এস.আই হাবিবুর রহমান।
শনিবার দুপুরে সরেজমিন ধর্ষনের চেষ্টার ঘটনায় দায়ের করা মামলার বাদী তাজ নাহার বেগমের বাড়িতে গিয়ে বসত ঘর তালা বন্ধ পাওয়া যায়। এ সময় এলাকাবাসীর সাথে আলাপ কালে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতা, সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধ ও টাকা লেনদেনের জেরেই সুমনকে ডেকে নিয়ে এভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। এলাকাবাসীর প্রশ্ন, যদি ধর্ষনের চেষ্টার ঘটনাই ঘটতো বা ঘটনাটি সত্যি হতো তাহলে বাদীসহ তার পরিবারের সবাই পালাতক কেন?
কাদিপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার বাহার উল্যাহ জানান, বিষয়টি দু:খজনক। সেখানে ধর্ষনের চেষ্টার কোন ঘটনা ঘটেছে বলে আমার মনে হয়না। আমি যত টুকু জানি, সুমনদের সাথে ইব্রাহিমদের সম্পত্তি ও টাকা দেলদেন দিয়ে কিছু বিরোধ আছে।
এ ব্যাপারে বেগমগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) হারুন উর রশিদের সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, এ ঘটনায় উভয় পক্ষ থেকে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।