করোনা ঝুকিতে বৃহত্তর নোয়াখালী, আমাউমে কলেজে করোনা পরীক্ষাগার স্থাপনের দাবী
ইয়াকুব নবী ইমন: প্রবাসী অধ্যুষিত ও গণবসতি পূর্ন এলাকা হিসেবে মারাত্মক করোনা ঝুকিতে রয়েছে বৃহত্তর নোয়াখালী। বিশ^ব্যাপী করোনা রোগ ধরা পড়ার পরও হাজার হাজার প্রবাসী বাড়িতে এসেছে। এর মধ্যে অধিকাংশই মানছে সরকারী নির্দেশনা। ফলে এ অঞ্চলেও করোনা রোগের ঝুঁকি বাড়ছে। তাই গুরুত্ব বিবেচনায় চৌমুহনীর চৌরাস্তায় অবস্থিত আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজে করোনা পরীক্ষাগার স্থাপনের দাবী উঠেছে। কলেজটিতে অত্যাধুনিক মাইক্রোবায়োলজি ল্যাব, অবকাঠামোগত সুবিধা, জনবলসহ করোনা ভাইরাস পরীক্ষার বেশিরভাগ যন্ত্রপাতিই রয়েছে। শুধুমাত্র আরটি-পিসিআর মেশিন ও কীটসহ কিছু ল্যাব সামগ্রী সংযোগ করতে পারলেই কোভিড-১৯ বা করোনা পরীক্ষা করতে সক্ষম কলেজ কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার ছাড়া দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের বিশাল জনগোষ্টির করোনা ভাইরাস পরীক্ষার আর কোন পরীক্ষাগার নেই। এমনিতেই এই অঞ্চল প্রবাসী অধিষ্যুত। তাই সাধারণ মানুষ করোনা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা প্রকট। সেই গুরুত্ব বিবেচনায় চৌমুহনীর চৌরাস্তায় অবস্থিত আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ করোনা রোগ সনাক্তে পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে চায়। কলেজটিতে রয়েছে অবকাঠামোগত সুবিধা, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে অত্যাধুনিক ল্যাব, জনবলসহ করোনা ভাইরাস পরীক্ষার বেশিরভাগ যন্ত্রপাতি। শুধুমাত্র আরটি-পিসিআর মেশিন ও কীটসহ কিছু ল্যাব সামগ্রী সংযোগ করতে পারলেই কোভিড-১৯ বার করোনা পরীক্ষা করা যাবে।
এছাড়া মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে রয়েছেন ৩ জন সহকারী অধ্যাপক, ২ জন প্রভাষক, বাইরোলজিতে উচ্চতর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ২ জন বিএসসি মেডিকেল ও ৪ ল্যাব টেকনোলজিস্ট। সব মিলিয়ে করোনা রোগ পরীক্ষায় পুরোপুরি প্রস্তুত কলেজ কর্তৃৃপক্ষ। তাই দ্রুত কলেজটিতে করোনা পরীক্ষাগার স্থাপনের দাবী জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ঠদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী।
স্থানীয় সংবাদ কর্মী তাজুল ইসলাম মানিক ভূঁইয়া ও এ আর আজাদ সোহেল জানান, এখানকার প্রতিটি ঘরে একজন নয় একাধিক প্রবাসী রয়েছে। করোনা রোগকে কেন্দ্র করে অনেকে বাড়ি ঘরে চলে এসেছেন তাই আমরা মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছি। এমতাবস্থায় দ্রুত এখানে একটি করোনা টেষ্ট কেন্দ্র স্থাপনের দাবী জানাচ্ছি।
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) নোয়াখালী জেলা সভাপতি ডা. ফজলে এলাহী খান ও সাধারন সম্পাদক ডা. মাহবুবুর রহমান জানান, এই কলেজে করোনা পরীক্ষাগার স্থাপন হলে নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর কুমিল¬াসহ অন্তত আটটি জেলার মানুষ করোনার পরীক্ষা করাতে পারবে। এতে ঢাকা ও চট্টগ্রামে রোগীদের চাপ কমবে।
আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবদুস সালাম জানান, ইতিমধ্যে সরকারের একটি প্রতিনিধি দল কলেজটি পরিদর্শন করেছে, সরকার সাপোর্ট দিলে যে কোন মুহুর্তে আমরা করোনা ভাইরাস পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে সক্ষম।
বেগমগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক বাদশা ও চৌমুহনী পৌর মেয়র আক্তার হোসেন ফয়সল আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজে করোনা রোগ পরীক্ষাগার স্থাপনের দাবী জানিয়ে বলেন, করোনা রোগ মোকাবেলার পূর্ব শর্ত হচ্ছে আগে কে রোগটিতে আক্রান্ত তা সনাক্ত করা। রোগটি সনাক্ত করার পর আসবে চিকিৎসার বিষয়। তাই গুরুত্ব বিবেচনায় এখানে করোনা রোগ পরীক্ষাগার স্থাপন করবে সরকার এই প্রত্যাশা করছি আমরা।
নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরণ বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি ইতিমধ্যে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভিডিও কনফারেন্সে ডিসি সাহেবও গুরুত্বসহকারে বিষয়টি তুলে ধরেছেন। সরকারের প্রতিনিধি দল এসে দেখে গেছেন, আশা করি সহসায় এই কলেজে করোনা পরীক্ষাগার স্থাপন করা হবে।