রক্ষক যখন বক্ষক, মাক্স চুরিতে জড়িত বাংলাদেশ বিমান ও কস্টম হাউজের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা
নিশান রিপোর্টার- চোরের খনিতে পরিণত হয়েছে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও ঢাকা কাস্টম হাউজের অভ্যন্তর । এই দুটি প্রতিষ্ঠানের রক্ষকরাই এখন ভক্ষকের ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদের অপকর্মের কারণে দেশের শীর্ষ স্থানীয় তমা গ্রুপের দীর্ঘদিনের সুমান ক্ষুন্ন হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক। অভিযোগের পর বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চুরির ঘটনাটি বেরিয়ে আাসলে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি তমা গ্রুপ কেন্দ্রীয় ওষুধাগারের জন্য বিদেশ থেকে ৩ লাখ এন-৯৫ মাস্ক আমদানি করে। বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে আমদানি কার্গো এলাকায় তমা গ্রুপের আমদানি করা পণ্যের (এন ৯৫ মাস্ক) চালানের কিছু পণ্য চুরির ঘটনা ঘটে। এতে করে তমা গ্রুপের আমদানি করা মাস্ক কেন্দ্রীয় ওষুধাগারে জমা দেয়ার পর গননায় কম ধরা পড়ে। চুরির কারনে মাস্ক কম হওয়ার এই বিষয়টিকে ভিন্নখানে নিয়ে একটি মহল তমা গ্রুপের মাস্ক কেলেংকারি ও অনিয়ম-দূর্নীতি বলে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়। এতে সর্বত্র ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। নানামুখি চাপ ও সমালোচনার মুখে পড়ে তমা গ্রুপ কর্তৃপক্ষ। পরে বিষয়টি জানিয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান তমা গ্রুপ। এর পর তদন্তে নামে বেবিচক। তদন্তে নেমে কেচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসে। মাস্ক চুরির সাথে বাংলাদেশ বিমান ও ঢাকা কাস্টম হাউজের অসাধু বেশ কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারি জড়িত থাকার প্রমান পায় তদন্ত কমিটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেবিচকের এক কর্মকর্তারা জানান, মাস্ক চুরির ঘটনায় সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হলে বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল মফিদুর রহমানের নির্দেশে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সাপ্তাহব্যাপী তদন্ত শেষে কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করে কমিটি। প্রতিবেদনে উঠে আসে বিমানবন্দরের অভ্যন্তরের চুরির সঙ্গে জড়িতদের নামের তালিকা। তিনি আরো বলেন, মাস্ক চুরির সাথে বাংলাদেশ বিমানের কার্গো শাখা ও ঢাকা কাস্টমস হাউজের অসাধু বেশ কয়েজ জন কর্মকর্তা-কর্মচারি জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। যা তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে বিমানবন্দন অভ্যন্তর ও ঢাকা কাস্টমে চুরির ঘটনার দায় এসে পড়ে তমা গ্রুপের উপর। এ ঘটনায় একটি মহল ও কিছু মিডিয়া হাউজ তমা গ্রুপের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বিভ্রান্তির কথ্য প্রচার করে। যার কারণে দীর্ঘদিনের সুনাম ধন্য তমা গ্রুপের সুনাম ক্ষুন্ন হয় এবং বেকায়দায় পড়তে হয় তমা গ্রুপ কর্তৃপক্ষকে।
এ বিষয়ে তমা গ্রুপের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক বলেন, ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজ দেখে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হয় আমাদের মাস্কগুলো বিমান বন্দর থেকে খোয়া গেছে। আমাদের মতো এতো বড় একটা কোম্পানী, আমাদের যথেষ্ট পরিমান সুনাম নষ্ট হয়েছে। যারা এমন চুরির ঘটনার সাথে জড়িত সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিৎ।
এদিকে বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, বিমানবন্দরে তমা কনস্ট্রাকশনের আমদানি করা মাস্ক চুরির সঙ্গে জড়িত বিমান ও ঢাকা কাস্টমস হাউজের বেশ কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারি জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিমান ও কাস্টমস সংস্থাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। চুরির ঘটনাটি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে বলেও জানান মফিদুর রহমান।