নোয়াখালী-৩(বেগমগঞ্জ) আসনে নির্বাচনের ফ্যাক্টর জাতীয় পার্টি
বিশেষ প্রতিনিধি: আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-৩(বেগমগঞ্জ) আসনে বর্তমানে জাতীয় পার্টির অবস্থান আগের যে কোন সময়ের তুলনায় ভালো । দলের নেতাকর্মী উজ্জিবিত ও সু-সংগঠিত। ফলে আসন্ন নির্বাচনে এই আসনে ভোটের ফালাফলে প্রভাব ফেলতে পারে জাতীয় পার্টি ও দলের ভোটাররা। এখানে জাতীয় পার্টির প্রার্থী উপজেলার জাতীয় পার্টির সভাপতি ও দলের কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য ফজলে এলাহী সোহাগ মিঞা। তিনি নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে চষে বেড়াচ্ছেন চৌমুহনী পৌর এলাকাসহ উপজেলার গ্রামাঞ্চল।
দলের একাধিক নেতাকর্মীর সাথে আলাপ কালে তারা জানান, ফজলে এলাহী সোহাগ মিঞা একটি সৎ আদর্শের নাম। যার কাছে কোন অসৎ কাজের বা ব্যক্তির স্থান নেই। কিছু সুবিধালোভী ব্যক্তি স্বার্থের কারণে এক সময় বেগমগঞ্জ জাতীয় পার্টি সাংগঠনিক কর্মকান্ডগুলো ঝিমিয়ে পড়ে। ২০১৫ সালে পল্লীবন্ধুর সাথে কথা বলে ফজলে এলাহী সোহাগ বেগমগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করার লক্ষে কাজ শুরু করেন। যা বৃহত্তর নোয়াখালীর দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষও অবগত। সোহাগের কাজের ও দলের প্রচার প্রচারণা দেখে অন্য দলের লোকেরা চিন্তিত হয়ে পড়ে। ১৯৯০তে দলের দুর্দিনে রাজপথে আন্দোলন করেছেন, আবার ২০১৪-ও সালে দলের দুর্দিনে মাঠে ছিলেন।
ফজলে এলাহী সোহাগের দুরদর্শিতায় ও সাংগঠনিক কর্মকান্ডে অল্প দিনেই বেগমগঞ্জ উপজেলা তথা বৃহত্তর নোয়াখালীর প্রাণ কেন্দ্র চৌমুহনীতে দলের অবস্থান শক্তি শালী হয়ে উঠে। যা অতীতের যে কোন নেতার চাইতে সোহাগ মিঞা করে দেখিয়েছেন। এর পর দূর্ভাগ্য যে তাদের দলের নির্বাচন ব্যবসায়ীরা অন্যদলের এজেন্ট হয়ে দলের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে এবং সোহাগ মিঞাকে ছোট করে বিভিন্ন ধরণের কথাবার্তা চড়াচ্ছেন।
নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে আরো বলেন, বেগমগঞ্জ জাতীয় পার্টিতে এর আগে যত নেতাই ছিলেন তাদের চাইতে সোহাগ মিঞার অবস্থান শক্ত। তিনি এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তন। যিনি শুধু বেগমগঞ্জে নয় পুরো নোয়াখালীতেই পরিচিত। বাংলাদেশের অনেক জায়গায় তাদের বংশধররা সুনাম ও সন্মানীত পরিবারে ছড়িয়ে আছে। যার পারিবারিক ইতিহাস বেগমগঞ্জে ৬০০ বছরের বেশী। বর্তমানে জাতীয় পার্টি বেগমগঞ্জ উপজেলায় অতীতের যে কোন সময়ের ছেয়ে শক্ত প্রতিদ্বন্ধী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাতীয় পার্টি মহাজোটে থাকলেও নোয়াখালী-৩ আসনে জাতীয় পার্টির আলাদা প্রার্থী দেওয়া হয়েছে ফজলে এলাহী সোহাগ মিঞাকে। দলের মনোনয়ন পাওযার পর থেকেই তিনি গণসংযোগ করে যাচ্ছেন উপজেলার বিভিন্ন স্থানে। উজ্জিবিত দলের নেতাকর্মীরা। আর এই আসনে ১৪ দল থেকে ভোট করছেন বর্তমান এমপি ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ কিরণ।
এদিকে এই আসনে ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচন করছেন সাবেক এমপি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্যাহ বুলু। মামলা হামলার কারণে এখানে তাদের ভঙ্গুর অবস্থা হলেও আসনটি ধানের শীষের ঘাঁটি। ফলে তারা অনেকটা নীরবে নিবৃত্তে প্রচার প্রচারনা চালায়ি যাচ্ছে। সেই হিসেবে জাতীয় পার্টি আলাদা নির্বাচন করলে জাতীয় পার্টির ভোট মাইনাস হবে ১৪ দলের প্রার্থী মামুনুর রশিদ কিরণ থেকে। এ ক্ষেত্রে সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ ভোট হলে জয়ের মাঠে এগিয়ে যেতে পারে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী বুলু।
এই সমীকরণে ১৪ দলের প্রার্থী মামুনুর রশিদ কিরণ ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী বরকত উল্যাহ বুলুর জয়ের মাঝে ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী ফজলে এলাহী সোহাগ মিঞা।
অপরদিকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বেগমগঞ্জবাসীকে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল মার্কায় ভোট দেওয়ার আহবান জানিয়েছেন ফজলে এলাহী সোহাগ মিঞা। তিনি নির্বাচিত হলে- দুর্নীতি ও মাদক মুক্ত সমাজ ব্যবস্থা, চাঁদাবাজি মুক্ত জীবন ও পরিবেশ, যে কোন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বানিজ্য বন্ধ করা, সুশিক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, চৌমুহনীর চৌরাস্তা বাজারকে যানজট মুক্ত করে ফুটপাতের ব্যবসায়িদের জন্যে স্থায়ী ভাবে ব্যবসা করার ব্যবসায়িক স্থাপনার ব্যবস্থা করা, শিক্ষিত যুবকদের চাকরির সুযোগ করা, বেকার যুবকদের বিদেশে চাকরির সুযোগ করা, নারীদের সন্মান ও চাকরির সুব্যবস্থা করা, ধর্ম বর্ণের উর্ধে মানুষের অধিকার ও মানুষকে ভালোবাসা নিশ্চিত করা, দলমত নির্বিশেষে সকলের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করা, স্থানীয় ভাবে শিশু ও মা বোনদের জন্য একটি বিনোদন কন্দ্রে করা, সকল প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের সঠিক অধিকার নিশ্চিত করা, মটর শ্রমিকদের তাদের আয়ের সঠিক রাস্তা দেখানো এবং তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা, প্রশানের সহযোগিতা ও পরামর্শ নিয়ে সকল প্রকার অবৈধ কর্মকান্ডকে ধ্বংস করাসহ একাধিক অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন।
এক প্রতিক্রিয়ায় জাতীয় পার্টির প্রার্থী ফজলে এলাহী সোহাগ মিঞা বলেন, আমি মানুষ তাই আল্লাহর সুষ্টির সেরা মানুষকে ভালোবাসি, এটা শুধু নির্বাচনের জন্যে নয় আমি গত চার বছর ধরে প্রতিনিয়তই মাঠে ঘাটে গ্রামে-গঞ্জে গিয়ে আমাকে উপস্থাপন করেছি। বেগমগঞ্জবাসীকে বুঝানোর চেষ্টা করেছি আমার দুনিয়াবি কোন লোভ লালসা নেই, কোন অট্টালিকার চাহিদা নেই, আমি অসুস্থ সমাজকে সুস্থ ও পরিবর্তন করার চেষ্টায় এবং মানুষের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করতে এসেছি। যদি আপনারা আমাকে সহযোগিতা করেন তবেই আমি পরিবর্তনের শুরুটা বেগমগঞ্জ থেকেই করবো। যাহা ছড়াবে পুরো দেশে।
তিনি আরো বলেন, জাতীয় পার্টির দায়ীত্ব নেওয়ার পর আমার কর্মকান্ড দেখে বিভিন্ন দল থেকে অনেকে তাদের দলে ভেড়ানোর জন্য আমাকে অফার দিয়েছিলো। কিন্তু আমি এক বাক্যে সবাইকে উত্তর দিতাম- মাঠের রাজনীতি করলে লাঙল নিয়ে করবো, আমি পল্লীবন্ধুর সৈনিক আগেও ছিলাম এবং থাকবো কারণ তিনিই এদেশে সুশাসন দিয়েছেন আর কেউ দিতে পারেননি। সৎ কাজ করতে মৃত্যু ছাড়া কোন শক্তিই আমাকে ঠেকাতে পারবে না ইনশাআল্লাহ্।