নোয়াখালীতে গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনায় মামলা, ৩ আসামি গ্রেফতার
স্টাফ রিপোর্টার: স্বামী সন্তানদের বেধে রেখে নোয়াখালী সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলী ইউনিয়নের বাগ্যা গ্রামে গৃহবধূ (৩২) কে ঘর থেকে তুলে নিয়ে গণধর্ষনের ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে ভিকটিমের স্বামী সিরাজ উদ্দিন বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনা বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩ ধর্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মোঃ সোহেল, বেছু ও স্বপন। আজ নোয়াখালী পুলিশ কুমিল্লার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে মূল আসামি সোহেলকে গ্রেফতার করে। গতকাল মঙ্গলবার লক্ষ্মীপুর জেলায় অন্য আসামি স্বপন ও নোয়াখালী থেকে বাদশাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ভিকটিমের ভাষ্যমতে, রবিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে তাদের ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে স্থানীয় সন্ত্রাসী সোহেল, চৌধুরী, সহেল, আনছার মাঝির জামাই, বেচু, হেঞ্জু, সোহগ’সহ ১০জন। এসময় তারা তাদের ঘরে ভাঙচুর করে তার স্বামী সিরাজ উদ্দিনকে মারধর ও ছেলে মেয়েদের বেধে রেখে তাকে (ভিকটিম) কে উঠানে নিয়ে যায়। পরে তারা কাপড় দিয়ে ভিকটিমের মুখ বেধে সবাই পালাক্রমে ভিকটিমের উপর পাষবিক নির্যাতন চালায়। এসময় তারা ভিকটিমকে কুড়াল ও লাঠি দিয়ে বেধম পিটিয়ে জখম করে।
ভিকটিম আরো জানায়, পরে সন্ত্রাসীরা তাকে পুকুর ঘাটে নিয়ে জবাই করার চেষ্টা করলে সে সন্তানদের কথা বলে তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়। পরে তাদের আত্মচিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুঁটে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। সন্ত্রাসীরা সবাই রুহুল আমিন মেম্বারের অনুসারি বলেও অভিযোগ করেন ভিকটিম।
এদিকে সোমবার সকালে স্থানীয় লোকজন ভিকটিমকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে দ্বিতীয় তলার গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করে।
ধর্ষিতার স্বামী সিরাজ উদ্দিন জানান, রবিবার দুপুরে চরজুবলী ১৪নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে যায় তার স্ত্রী। পরে ভোট দিয়ে বাড়ী আসার পথে স্থানীয় সন্ত্রাসী সহেল তার স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দিলে তার স্ত্রী এর প্রতিবাদ করলে তাদের সাথে বাকবির্তকের ঘটনা ঘটে এবং সে বাড়ীতে চলে আসে। এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে সহেল তার অনুসারীদের নিয়ে রাতে তাদের ঘরে হামলা চালিয়ে এই ঘটনা ঘটায়। ভিকটিমের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ঘটনার মূল স্থানীয় ইউপি সদস্য ও আ’লীগ নেতা রুহুল আমিনকে আসামী করা হয়নি।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: সৈয়দ মহি উদ্দিন আব্দুল আজিম জানান, প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। গৃহবধূর শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। গাইনি বিভাগের তত্ত্বাবধানে ধর্ষিতার চিকিৎসা চলছে। পরীক্ষা-নিরিক্ষার পর বিস্তারিত বলা যাবে।
মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন জানান, ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী সিরাজ উদ্দিন বাদী হয়ে সোহেল’সহ ৯জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।