জাতীয় নিশান প্রতিবেদক, রামগতি-কমলনগর(লক্ষ্মীপুর):
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে যৌতুক মামলায় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মনগড়া প্রতিবেদনের অভিযোগ উঠেছে। রামগতি উপজেলার চর রমিজ ইউনিয়নের চর মেহার গ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে আব্দুল জলিল এ অভিযোগ করেন।
অভিযোগে জানা যায়, চর জাঙ্গালিয়া গ্রামের ফোরকানিয়া এলাকার বাসিন্দা আবুল খায়ের মিস্ত্রীর মেয়ে মিশু আক্তার ওরপে নিশুর সাথে রামগতি উপজেলার চর রমিজ ইউনিয়নের চর মেহার গ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে আব্দুল জলিল সাথে মিশুর এক আত্মীয়ের বাসায় সাক্ষাৎ হয়। সেখানে একে- অপরকে পছন্দ করে। দীর্ঘ ৩ মাস পর উভয়ের মতামতের ভিত্তিতে পারিবারিক ভাবে গত ৭ ই জুলাই রেজিস্ট্রিকৃত কাবিন নামা মুলে বিবাহ হয়। দেনমোহর ৫ লক্ষ টাকা,উসুল ছিল ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।দাম্পত্য জীবন দুই মাস অতিবাহিত না হতেই গত ২৩ আগস্ট মিশু আক্তার নগদ অর্থসহ স্বর্ণালংকার নিয়ে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে পিত্রালয়ে চলে আসার অভিযোগ উঠে। ৩০ আগস্ট মিশু আক্তার ব্যবহৃত মোবাইল নং ০১৩২১৮৪১০১১ নম্বর থেকে মেসেজ এর মাধ্যমে স্বামী আব্দুল জলিলকে সংসার না করার বিষয়টি জানিয়ে দেয়। স্বামী আব্দুল জলিল যেন, তাদের বাড়িতে না আসে তার জন্য নিষেধ করে। আব্দুল জলিল বিষয়টি ঐ এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিদেরকে জানালে ১১ অক্টোবর শুক্রবার বাদ মাগরিব স্থানীয় প্রি-ক্যাডেট স্কুল অফিস( ফোরকানিয়া) কক্ষে গ্রাম্য সালিশের বৈঠক হয়। উক্ত বৈঠকে অর্ধশতাধিক লোকের উপস্থিতিতে মিশু আক্তার জানান,তার স্বামী তাকে সন্দেহ করে।এই অজুহাতে স্বামী আব্দুল জলিল এর সংসার করবেনা। উপস্থিত সালিশদারগণ তাদের সম্পর্কটি টিকিয়ে রাখার স্বার্থে বেশ কিছু দিন সময় দেন। বৈঠকের ১ ঘন্টা ৪৯ মিনিটের অডিও এবং ৪৬ সেকেন্ডের ভিডিও রেকর্ড সংরক্ষণ করা হয়েছে। উক্ত বেধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কোন সমাধান না হওয়ায় আব্দুল জলিল নিরুপায় হয়ে গত ২১ ই অক্টোবর ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১০০ ধারায় বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, লক্ষ¥ীপুর একটি মামলা করে। মামলা নং ২৪৪/২৪। ১৪ নভেম্বর উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে বিজ্ঞ আদালত মিশু আক্তারকে তার ইচ্ছানুযায়ী পিতা-মাতার জিম্মায় নিজ বাড়িতে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। পরবর্তীতে মিশু আক্তার গত ২৭ অক্টোবর স্বামী আব্দুল জলিল এর বিরোদ্ধে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী অঞ্চল কমলনগর লক্ষ¥ীপুর ,২০১৮ ইং সনের যৌতুক বিরোধ আইনের ৩ ধারায় মামলা করে। সি আর মামলা নং ৮৮৫/২৪। উক্ত মামলার এজহারের সাথে গত ১১ই অক্টোবরের গ্রাম্য সালিশ বৈঠকে মিশু আক্তারের দেওয়া জবানবন্দির মিল পাওয়া যায়নি। উক্ত মামলাটির তদন্ত কর্র্মকর্তা এএস আই উত্তম কুমার দে। মামলার ১নং স্বাক্ষী বাদী মিশু আক্তারের মা। ২নং স্বাক্ষী ইউপি সদস্য সিরাজ মেম্বারের নিকট মামলা সম্পর্কে জানতে চাইলে,তিনি মোবাইল ফোনে জানান, এই মামলার স্বাক্ষী সম্পর্কে আমার জানা নেই এবং থানা পুলিশ আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে নাই। ৩ নং স্বাক্ষী ডা মো ইউছুপ জানান,মামলার স্বাক্ষী হয়েছি এখনো স্বাক্ষী ডাকে নাই। ৪ নং স্বাক্ষী মো বেলাল হোসেন, দৈনিক সমকাল পত্রিকার প্রতিনিধি এবং উপকূল সরকারি কালেজ এর প্রভাষক। তিনি জানান,এই মামলার স্বাক্ষী হিসেবে আমি অবগত নয়। মামলায় উল্লেখিত মোবাইল নম্বরটি আমার না। ভুক্তভোগী আব্দুল জলিল বলেন, যেহেতু মিশু আক্তার গত ৩০ আগস্ট মেসেজ এর মাধ্যমে তাদের বাড়িতে যেতে নিষেধ করেছে সেইদিন থেকে তার সাথে দেখা সাক্ষাৎ নেই। তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন,আমি ব্যবসায়ী নয়,আইন পেশায় কর্মরত (শিক্ষানিবেশ)। আমি যৌতুক চাইনি।বরং মিশু আমার নগদ অর্থসহ স্বর্নালংকার নিয়ে আসে। তার জন্য মামলা ও করি। সুনাম ক্ষুন্ন কবিনের টাকার জন্য আমার বিরোদ্ধে মিথ্যা যৌতুক মামলা দিয়েছে।এর আগে মিশু আক্তারের বড় বোন নিপু আক্তার ও একই কায়দায় প্রথম স্বামীর সংসার বিচ্ছিন্ন করে কাবিনের টাকা আদায় করে। তদন্ত কর্মকর্তা উত্তম কুমার দে প্রত্যেক স্বাক্ষীর নামে আলাদাভবে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন। তবে মনগড়া প্রতিবেদনের বিষয়টি অস্বীকার করে। তিনি জানান, যে সকল স্বাক্ষীকে পাওয়া যায় নাই মোবাইলের মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।
সম্পাদক: ইয়াকুব নবী ইমন, মোবাইল: : ০১৭১২৫৯৩২৫৪, ইমেইল-: jatiyanishan@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2025 দৈনিক জাতীয় নিশান. All rights reserved.