ছবি: সংগৃহীত
ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকার ভাড়াটিয়া পারুল বেগম। তার স্বামী নেই। প্রতিবেশীদের ছেলে-মেয়েদের আরবি শেখান। তিন ছেলেকে মানুষের মতো মানুষ করার লক্ষ্য নিয়ে এই জীবনযুদ্ধে নেমেছেন তিনি। বহু কষ্ট করে নিজের সংসার সাজিয়েছেন। স্বামীর অবর্তমানে দুই ছেলেকে কলেজে ভর্তি করেছেন।
কিন্তু নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে একসঙ্গে তার দুই ছেলের মৃত্যু হয়েছে। দুই ছেলেকে হারিয়ে মা পারুল বেগম এখন পাগলপ্রায়। ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকার নূরজাহান বেগমের বাসার ভাড়াটিয়া পারুল বেগম।
পারুল বেগমের প্রতিবেশী স্মৃতি আক্তার বলেন, পারুল আমার খালা হন। এক বাড়িতে বসবাস করি। পারুল খালার স্বামী নুরুউদ্দিন নেই। তার তিন ছেলের মধ্যে সাব্বির (২১) নারায়ণগঞ্জ কলেজে বিবিএতে পড়াশোনা করে। জুবায়ের (১৮) নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজে লেখাপড়া করে। ছোট ছেলে ইয়াছিন স্কুলে পড়াশোনা করে। পারুল খালা বিভিন্ন জনের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নারীদের আরবি শেখান। পাশাপাশি অন্যের ছেলে-মেয়েদের আরবি পড়ান। এই দিয়ে যা উপার্জন হয় তা দিয়ে সংসার চালান। সেই সঙ্গে তিন ছেলেকে মানুষ করার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু শুক্রবার রাতে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় সাব্বির ও জুবায়ের একসঙ্গে মারা যায়। দুই ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে ইয়াছিন অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার মা সংজ্ঞাহীন। তাকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। সাব্বির ও জুবায়েরের লাশ এলে দাফন করা হবে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ৯টায় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিমতল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এরপর দগ্ধ ৩৭ জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এরমধ্যে ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সম্পাদক: ইয়াকুব নবী ইমন, মোবাইল: : ০১৭১২৫৯৩২৫৪, ইমেইল-: jatiyanishan@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2024 দৈনিক জাতীয় নিশান. All rights reserved.