ছবি: ইন্টারনেট
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকায় শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে আটটার দিকে বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় শোকস্তব্ধ গোটা দেশ। ঘটনার দুই দিন অতিবাহিত হওয়ার পর জানা গেছে মসজিদে ছয়টি এসির একটিও বিস্ফোরিত হয়নি। লিকেজ থেকে বের হওয়া গ্যাস এবং বিদ্যুতের স্পার্ক থেকে বের হওয়া আগুনেই এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে মসজিদ বিস্ফোরণের পর নতুন ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী। পুরো এলাকার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে তিতাস কর্তৃপক্ষ। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শত শত পরিবারকে। আজ রবিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সরেজমিন পুরো এলাকায় দেখা গেছে এমন দৃশ্য।
এলাকাবাসী জানান, ভয়াবহ ওই বিস্ফোরণের পর থেকে গত ৩ দিন ধরে কোনো রকম মাইকিং, ঘোষণা ছাড়াই গ্যাস বন্ধ রেখেছে তিতাস। তাই ঘনবসতিপূর্ণ এই এলাকার মানুষজন বাধ্য হয়ে করছেন বিকল্প ব্যবস্থা। রান্নার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে লাকড়ি, খড়কুটো।
বিষয়টি নিয়ে ওই এলাকার গৃহিণী রেহানা আক্তার বলেন, ৩ দিন ধরে গ্যাস নাই, রান্না তো থেমে থাকে না। যেভাবেই পারছি লাকড়ি-খড়কুটো জোগাড় করে রান্না করতে হচ্ছে। মসজিদে বিস্ফোরণের কারণে বন্ধ তা জানলে কবে গ্যাস খুলবে তা জানা নাই। পুরো এলাকা ঘুরে একই রকম দৃশ্য দেখা গেছে আবাসিক বাসা বাড়িতে।
স্থানীয় বাসিন্দা রুপু হোসেন জানান, বিস্ফোরণের কারণে গ্যাস বন্ধ থাকায় আমরা বিষয়টি মেনে নিয়েছি। কিন্তু এভাবে কতদিন? তিতাস কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল মসজিদের যে লাইনটি লিকেজ শুধু সেই লাইনটি বন্ধ করা। তা না করে পুরো এলাকার লাইন বন্ধ করাটা কতটা সমীচিন তা ভেবে দেখা উচিত ছিল।
এদিকে তিতাস ফতুল্লা শাখার জেডএমও জানিয়েছেন যুগান্তরকে বলেন, তদন্তের আলামত রক্ষার স্বার্থে মসজিদ এলাকার দুইটি গ্যাস বাল্ব বন্ধ রাখা হয়েছে। আমরা আজকে লাইন খোলার চেষ্টাও করেছিলাম, কিন্তু তদন্ত সংশ্লিষ্টরা করতে দেয়নি।
মাইকিং করেছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলে যেহেতু সবাই জানে বিষয়টা তাই মাইকিং করার দরকার মনে করিনি। এমনকি কবে গ্যাস চালু হতে পারে সে বিষয়েও কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারেননি এই কর্মকর্তা।
তিনি জানান, হয়তো স্পটে তদন্ত যতদিন চলবে ততদিন গ্যাস বন্ধ রাখতে হতে পারে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে ভয়াবহ বিষ্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে এই বিস্ফোরণ হয়েছে এমন ধারণার পর থেকেই ওই এলাকার গ্যাস বন্ধ রেখেছে তিতাস। অভিযোগ আছে, মসজিদ কমিটি আগেই জানিয়েছিলো তিতাসকে গ্যাস লিকেজের কথা। কিন্তু দাবি করা ৫০ হাজার টাকা ঘুষ না দেয়ায় সেই লাইনটি ঠিক করেনি তিতাস। এ ঘটনায় দেশজুড়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। দগ্ধ হয়ে ইতোমধ্যে মারা গেছেন ২৪ জন, বাকি ১৩ জনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
সম্পাদক: ইয়াকুব নবী ইমন, মোবাইল: : ০১৭১২৫৯৩২৫৪, ইমেইল-: jatiyanishan@gmail.com, IT Support: Trust Soft BD
Copyright © 2025 দৈনিক জাতীয় নিশান. All rights reserved.