জাতীয় নিশান প্রতিবেদক ঃ নোয়াখালী—২ (সেনবাগ—সোনাইমুড়ি আংশিক) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিকের (কাঁচি) সমর্থক আবদুর রহমান নামে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও গুলি ছোঁড়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবাদে রবিবার দুপুর সেনবাগ নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেছে স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান ভূইয়া মানিক। সংবাদ সম্মেলনে তিনি নৌকার সমর্থকদের দায়ী করছেন। অন্যদিকে নৌকা প্রার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করছেন।
এর আগে শনিবার রাতে সেনবাগ উপজেলার ছাতারপাইয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রহমানের বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী মোরশেদ আলমের সমর্থক বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং জড়িতদের বিচার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান ভূইয়া মানিক। সংবাদ সম্মেলনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তার সমর্থকরা সেনবাগ থানার ওসির অপসারণ দাবি করছেন। তারা বলেন পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি।
ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রহমানের অভিযোগ, শনিবার রাত ৮টার দিকে ৫০/৬০ জনের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা তার বাড়িতে হামলা চালায়। তারা ব্যাপক ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলিবর্ষণের পর বাড়ির দরজা—জানালার কাচ ও ভেতরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। ভাঙচুরের পর লুটপাট ও সিসিটিভির ফুটেজ নিয়ে গেছে। পুলিশকে গুলির খোসাসহ হামলার সরঞ্জাম বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক জানান, সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে নৌকার প্রার্থী মোরশেদ আলমের ছেলের নেতৃত্বে হেলমেট বাহিনী তার গণসংযোগে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে ব্যাপক হাতবোমার বিস্ফোরণ ও গুলিবর্ষণ করে তারা। পরে চেয়ারম্যান আবদুর রহমানের বাড়িতে গুলিবর্ষণ করে তাণ্ডব চালায়। নির্বাচনকে বানচাল করতে এবং ভোটারদের কেন্দে্র না আসতে তারা এ হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনার বিচার চেয়ে রবিবার নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান ভূইয়া মানিক। সংবাদ সম্মেলনে সেনবাগ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম মানিক, সেনবাগের সাবেক মেয়র টিপু ও উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহম্মদ, আওয়ামীলীগ নেতা শিহাব উদ্দিন সহ আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকমীর্রা উপস্থিত ছিলেন। সেনবাগে সন্ত্রাস ও অবৈধ অস্ত্রের মহড়া চলছে বলে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তার সমর্থক অভিযোগ করেন।
তবে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের (নৌকা) ছেলে সাইফুল আলম দিপু জানান, ঘটনার সময় তিনি ওই এলাকায় ছিলেন না। কারা এ হামলা করেছে তাও জানা নেই। নৌকার প্রার্থী মোরশেদ আলম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আবদুর রহমান চেয়ারম্যানের বাড়িতে তার কোন লোকজন হামলা করেনি। তারা (স্বতন্ত্র প্রার্থীর) সমর্থকরা নিজেরাই হামলার করে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে এবং আবদুর রহমান এলাকার একজন খারাপ লোক। ইতিপুর্বো প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কুটুক্তি করে জেল খেটেছে।
নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো.আসাদুজ্জামান জানান, গুলি ও হামলার খবর শুনেছি ইতিমধ্যেই আমাদের পুলিশ গিয়ে আলামত সংগ্রহ করেছে। কারা এ হামলা করেছে সে বিষয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অবৈধ অস্ত্র প্রদর্শন ও বহিরাগতদের অনুপ্রবেশের বিষয় জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, পাশ্ববর্তী কুমিল্লা ও ফেনী জেলার বর্ডার অঞ্চল হওয়ার কারনে এখানে অবৈধ অস্ত্র ঢুকতে পারে। আমরা সে বিষয় অভিযান চালাবো। সন্ত্রাসী যেই হোক কাউকে ছাড় দিব না।
ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভোটারদের পিটিয়ে মেরে ফেলবো এমন বক্তব্যের পরপরই স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের উপর এমন হামলার প্রশ্নে পুলিশ সুপার বলেন, ভিডিও ক্লিপটি দেখে এ হামলার সাথে মিলিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব। সন্ত্রাসী যেই হোক ছাড় দেয়া হবে না। প্রশাসন কঠোর অবস্থানে আছে।
Leave a Reply