সোনাইমুড়ী প্রতিনিধি: ক্ষমতাসীনদের হাতে নিহত নোয়াখালী জেলা এলডিপির সাংগঠনিক সম্পাদক রহমত উল্লাহর ছোট ভাই সোনাইমুড়ি থানা এলডিপি নেতা নুর নবীকে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে বাড়ি থেকে অপহরন ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
জানা গেছে, গত ২৬ মার্চ রাতে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে ৪ জনের একটি দল সোনাইমুড়ি থানা এলডিপি নেতা নুর নবীর বাসার দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে তার হাত, চোখ—মুখ বেঁধে মাইক্রোবাসে তুলে অপহরন করে। সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার অপরাধে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করা হয়। এ সময় তারা পরিবারের সদস্যদেরকেও হুমকি ধমকি দিয়ে যায়। অপহরনের শিকার নুর নবীর উপর পৈশাচিক র্নিযাতন করার পর গতকাল ২৭ মার্চ ভোর ৭ টার সময় তাকে গুরতর অবস্থায় বাসার সামনে ফেলে রেখে যায়। পরে স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
উল্লেখ্য যে, গত ১৮ মার্চ সোনাইমুড়ি থানা এলডিপি আয়োজিত সমাবেশ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটের সময় সোনাইমুড়ি থানার নদনা বাজারের পূর্ব পাড়ে ৮—১০ জনের অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তের দল নোয়াখালী জেলা এলডিপির সাংগঠনিক সম্পাদক রহমত উল্লাহ এবং তার ভাই সোনাইমুড়ি থানা এলডিপি নেতা নুর নবীর উপর দেশীয় ভারী অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় গুরুতর আহত হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান রহমত উল্লাহ এবং জখমপ্রাপ্ত হন নিহতের ভাই নুর নবী। হাসপাতাল হতে ফিরে এসে গত ১৯ মার্চ নিহতের ভাই এলডিপি নেতা নুর নবী এ হত্যাকান্ডের জন্য স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করতে গেলে থানার সামনে পুলিশের সাথে এলডিপি নেতাকর্মীদের সংর্ঘষ হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ নুর নবীকে গ্রেফতার করে থানায় আটকে রাখে। পরে সন্ধ্যার দিকে এলডিপি নেতাকর্মীদের আন্দোলনের মুখে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়।
এই হত্যার বিচারের দাবীতে নিহতের ভাই নুর নবী আন্দোলন করে আসছেন। গত ২১ মার্চ ভাইয়ের হত্যার বিচার চাইতে কোর্টে মামলা করতে গেলে পথিমধ্যেই তাকে পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা। সর্বশেষ গত ২৬ মার্চ সোনাইমুড়ি এলডিপি আয়োজিত স্বাধীনতা দিবসের সমাবেশে নুর নবী তার ভাই রহমত উল্যাহর হত্যার জন্য স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের দায়ী করে বক্তব্য দেয়ার পর নুর নবীকে হত্যার হুমকী ও ভয়—ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ করা হয়েছিল। আর সেদিন রাতেই তাকে অপহরন করে নির্যাতন করা হয়।
এই ঘটনায় ভয়ে পুরো এলাকায় কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছে। নুর নবীর বাসায় এবং হাসপাতালে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ের লোকজন ও ছদ্মবেশী গোয়েন্দা দল কড়া নজরদারী বসিয়েছে। পুলিশ এবারও এসব ঘটনায় থানায় কোন মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায় বলে নুর নবীর পরিবারের কাছ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
Leave a Reply