জাতীয় নিশান প্রতিবেদক: মূল্যায়ন নেই নোয়াখালীর ত্যাগী আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের। রাজপথের লড়াকু সৈনিকরা আজ জীবণযুদ্ধে পরাজিত। ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলায় আহত ও দলের দু:সময়ে আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নেয়া অসংখ্য ত্যাগী নেতাকর্মীর সংসার চলে কোনমতে, দিন কাটে অর্ধহারে অনাহারে। পাচ্ছেনা তেমন সহযোগীতা। তবে জেলা আওয়ামীলীগ বলছে, ত্যাগী নেতাকর্মীদের খোঁজ খবর নিয়ে তাদের মূল্যায়ন ও পাশে দাড়ানোর পাশাপাশি সার্বিক সহযোগীতা করা হবে।
নোয়াখালী পৌর এলাকার পশ্চিম সাহাপুর গ্রামের বেল্লাল হোসেন কাজী বেলাল আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতা। ২১ আগষ্ট গ্রানেড হামলার ঘটনায় তিনি মারাত্মক ভাবে আহত হন। ছোট ছোট তিন সন্তান নিয়ে বিপাকে পড়েন স্ত্রী। বর্তমানে তাদের দিন কাটে অর্ধহারে অনাহারে। নেই মাথা গোঁজার ঠাইও। টাকার অভাবে সন্তানদের পড়া লেখা বন্ধ হওয়ার পথে। ত্যাগী এই নেতার পরিবার তেমন কোন সহযোগীতা পাননি এবং বড় কোন নেতা খবরও নেননি। সহযোগীতার পাশাপাশি ২১ আগষ্ট গ্রানেড হামলার ঘটনার সাথে জড়িতদের বিচার দাবী করেছে অসহায় কাজী বেলালের স্বজন ও এলাকাবাসী। বেল্লাল হোসেন কাজী বেলালের স্ত্রী ও সন্তানরা জানান, আমরা এখনো পর্যন্ত সরকারীভাবে আশানুরুপ সহযোগীতা পাইনি। আমাদের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। থাকার যে ঘর রয়েছে, তাও নড়েবড়ে। আয়ের তেমন কোন উৎস নেই। টাকার অভাবে আমরা চলতে খুব কষ্ট হচ্ছে। তাই আমরা সরকারে সহযোগীতা চাই।
নোয়াখালী জেলার সাবেক ছাত্রনেতা কাজী বেলায়েত হোসেন রাজু বলেন, দলের দু:সময়ে আন্দোলন সংগ্রাম করা ত্যাগী নেতাদের দলে মূল্যায়ন নেই। আমরা রাজনীতি করতে গিয়ে অনেক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। দীর্ঘদিন কারাবরণ করতে হয়েছে। দল বিগত ১৫ বছর ক্ষমতায়, কিন্তু আমরা আজো অবহেলিত। ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করলে দল উপকৃত হবে। আমরা এখনো প্রস্তুত রাজপথে সংগ্রাম করতে। দলের প্রয়োজনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ডাকে সাড়া দিতে আমরা এখনো প্রস্তুত।
নোয়াখালী জেলার সাবেক ছাত্রনেতা মজিবুর রহমান বাচ্চু জানান, আমরা আওয়ামীলীগের রাজনীতি করতে গিয়ে অনেক হয়রানীর শিকার হয়েছি। সন্ত্রাসীদের হামলায় রক্তাক্ত হয়েছে শরীর। এখনো শরীরে সেই দাগ রয়েছে। অবমূল্যায়ন হলেও দলের সাথে কখনো বেইমানী করিনি। দল ক্ষমতায় আসার পর বিগত ১৫ বছর কিছু হাইব্রিড ক্ষমতার স্বাদ ভোগ করলেও আমরা অসহায়। ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না করলে দলই ক্ষতিগ্রস্থ হয়, এটা আমাদের নেতারা বুঝেন না। দলের প্রয়োজনে আন্দোলন সংগ্রামে হাইব্রিডরা পালিয়ে যায়, কিন্তু ত্যাগী নেতাকর্মীরা ঠিকই মাঠে থাকে। তিনি ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়নের দাবী জানান।
নোয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র শহীদ উল্যাহ খান সোহেল জানান, দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের খোঁজ খবর নিয়ে তাদের মূল্যায়ন ও পাশে দাড়ানোর পাশাপাশি সার্বিক সহযোগীতা করা হবে।
আওয়ামীলীগের দু:সময়ে দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করা নেতাকর্মীদের সঠিক মূল্যায়ন করে তাদের পাশে দাড়াবে আওয়ামীলীগের হাই কমান্ড, এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
Leave a Reply