শিরোনাম :
নাটেশ্বরে এমপির নাম ভাঙ্গিয়ে অপকর্ম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী রাহির নামে অপপ্রচার, নোয়াখালীতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন মদিনা বাজার যুব সমাজের উদ্যোগে যুবকদের সম্মানে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত প্রবাসীর সহযোগীতায় নোয়াখাালীতে মানবসেবা ফাউন্ডেশনের উদ্দ্যোগে ইফতার ও ঈদ উপহার  হাতিয়ার মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়নে কাজ করবেন সুইডেনের রাজকন্যা   কোম্পানীগঞ্জে বৈদ্যুতিক শট সার্কিটের আগুনে পুড়ল ৮ দোকান ২১ বছর বয়সে দেখায় শিশুর মত, আকৃতি দমাতে পারেনি ৩ ফুট ১০ ইঞ্চির সোনিয়াকে বেগমগঞ্জে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান স্কুলে শিক্ষকের বেত্রাঘাত, স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশী স্বামীসহ অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে গুলি করে হত্যা

বেগমগঞ্জে আর্থিক সংকটে বন্ধ এম এ মোতালেব হাই স্কুল

  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ১৭, ২০২২
  • 898 পাঠক

ইয়াকুব নবী ইমন:
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে প্রতিষ্ঠার ২৫ বছরেও এমপিওভূক্ত হয়নি এম এ মোতালেব হাই স্কুলটি। ফলে অর্থিক সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে স্কুলটি। স্কুলটি বন্ধ থাকায় উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার কিশোর তরুনরা।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, এলাকায় শিক্ষা বিস্তারের লক্ষে ১৯৯৭ সালে মীরওয়ারিশপুর ইউনিয়নের তালুয়া চাঁদপুর গ্রামে নিজের নামে এম এ মোতালেব হাই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন শিল্পপতি এম এ মোতালেব। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই স্কুলটি ভালোমতেই চলে আসছিলো। শিক্ষা দপ্তর থেকে দেয়া হয় একাডেমিক স্মীকৃতিও। পরবর্তিতে জেলা পরিষদ থেকে নির্মাণ করে দেয়া হয় স্কুল ভবন। প্রতিদিন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পদচারনায় মুখোর ছিলো স্কুল ক্যাম্পাস। কিন্তু ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠাতা এম এ মোতালেব মারা যাওয়ার পর অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে স্কুলটি। করোনাকালীন সময়ে শিক্ষকদের বেতন অনিয়মিত হয়ে পড়লে শিক্ষকরা অন্যত্র চলে যান। এক পর্যায়ে আর্থিক সংকটে বন্ধ হয়ে যায় স্কুলটি। বর্তমানে এলাকাবাসী স্কুলটি চালু করার জন্য একাধিকবার উদ্যোগ নিলেও সফল হচ্ছেনা। স্কুলটি বন্ধ থাকায় প্রাইমারি পাশ করে শিক্ষার্থীদের উচ্চ মাধ্যমিকে পড়তে দুর দুরান্তের স্কুলগুলোতে যেতে হয়। এতে অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে। তাই এলাকায় শিক্ষা বিস্তারের লক্ষে দ্রæত স্কুলটি পূরনায় চালুর দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী।
স্থানীয় একাধিক অভিভাবক জানান, আমাদের তালুয়া চাঁদপুর থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা অনেক দুরে মীরকাশেম বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়, বজরা হাই স্কুলসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। এতে তাদের সময় খবর দুটিই বেশি ব্যয় হয়। তাছাড়া মেয়ে শিক্ষার্থীরা যানবাহনের অভাবে যেতে পারেনা। স্কুলটি চালু হলে নিজেদের এলাকায় অনেকটা স্বাচ্ছ¡ান্দে তারা পড়া লেখা করতে পারবে।
এলাকার একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, আমরা আগে এম মোতালেব স্কুলে পড়তাম। এখন স্কুলটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুরের স্কুলে গিয়ে পড়তে হয়। সামান্য বৃষ্টি হলে রাস্তায় কাদা জমে যায়। ফলে ইচ্ছা থাকা সর্তেও অনেক সময় স্কুলে যেতে পারিনা। মেয়েদের ক্ষেত্রেও আরো বেশি সমস্যায় পড়তে হয়।
বজরা হাই স্কুলে ৭ম শ্রেনীতে পড়া শিক্ষার্থী মরিয়ম জানায়, স্কুলে যাওয়ার সময় গ্রামের রাস্তায় প্রায়ই গাড়ি পাইনা। অনেক পথ হেটে যেতে হয়। একা একা যেতে ভয়ও লাগে। আমাদের বাড়ির সামনের স্কুলটি চালু হলে সহজেই আমরা পড়া লেখা করতে পারবো।
মীরওয়ারিশপুর ইউনিয়নের বাসিন্ধা নুর মোহাম্মদ মনু জানান, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। আমরা শুনে আসছি বর্তমান সরকার শিক্ষা বন্ধব সরকার। তাই আমরা চাই সরকার দ্রæত এই স্কুলটি চালুর উদ্যোগ নেবে। এতে এলাকায় শিক্ষা বিস্তারের পাশাপাশি আত্ম সামাজিক উন্নয়ন হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
স্কুলটি চালু করতে সরকারের সহযোগীতা চেয়ে স্কুল পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা এম এ মোতালেবের স্ত্রী এডভোকেট শাহানারা বেগম জানান, মুলত ২০১৫ আমার স্বামী মারা যায়, এর পর আমার ছেলে মারা যায়। পারিবারিক সমস্যার কারণে আমার পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির দিকে ঠিক মতো নজর দেয়া সম্ভব হয়নি। আমার স্বামী অনেক কষ্ট করে লেখা পড়া করেছেন। তিনি এলাকার ছেলে মেয়েদের শিক্ষিত করতে এই স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। উনার অনেক স্বপ্ন ছিলো স্কুলটি নিয়ে। কিন্তু শেষ বয়সে এসে সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারেননি। স্কুলটি এমপিওভূক্ত করতেও তিনি অনেক চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কাজ হয়নি। আমাদের একটি একাডেমিক ভবনও এসেছে। স্কুল বন্ধ থাকায় তাও ফেরত গেছে বলে শুনেছি। মুলত করোনা কালে শিক্ষকদের বেতন দিতে না পারায় উনারা অন্যত্র চলে যাওয়ায় স্কুলটি বন্ধ হয়ে যায়। আমরা এখন স্কুলটি চালু করতে চাই। সরকার যদি এমপিওভূক্তির মাধ্যমে আর্থিক সংকট দুর করে তাহলে সহজেই স্কুলটি চালু করা সম্ভব হবে। স্কুলটির নামে অনেক সম্পদ রয়েছে। স্কুলটি চালু হলে আমরা ওই সম্পদ কাজে লাগিয়েও এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারবো। স্কুলটি চালুর ব্যাপারে আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন আপত্তিও নেই। আমরা স্কুলটি চালু করতে সরকারের সহযোগীতা কামনা করছি।

বেগমগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার গাউছুল আজম জানান, স্কুলটির একাডেমিক স্মীকুতি আছে। স্কুলটি চালুর জন্য কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের সাথে যোগাযোগ করে আমরা অবিশ্যই তাদের সহযোগীতা করবো।
স্কুলটি পুনরায় চালুর ব্যাপারে সব রকমের সহযোগীতার কথা জানিয়ে জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, আমাদের শিক্ষা অফিস ও ইউএনও’র সাথে কথা বলে বিস্তারিত জেনে স্কুলটি চালুর চেষ্টা করবো। যদি বৃহৎ এলাকার শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সুযোগ হয় এই স্কুলের মাধ্যমে তাহলে অবিশ্যই সরকার স্কুলটি চালুর উদ্যোগ নেবে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখবো।

সামাজিক যোগাযোগ মধ্যমে শেয়ার করুন...

এ বিভাগের আরো খবর....

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *