জাতীয় নিশান প্রতিবেদক ঃ বেগমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও নব—নির্বাচিত সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরন বলেছেন দুষ্ট গরুর চেয়ে শুন্য গোয়াল অনেক ভালো। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পরবর্তী উপজেলা আওয়ামীলীগের এক বিশেষ বর্ধিত সভায় বক্তব্যে উক্ত কথাগুলো বলেন।
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে দলের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। যারা দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দলের বাহিরে কাজ করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করার তাগিদও দেন তিনি। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পরবর্তী উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও চৌমুহনী পৌরসভার নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে আ’লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করায় ১৫ নেতাকে দলের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয় । এতে করে বেগমগঞ্জে দলীয় নেতা—কমীর্দের মাঝে বর্তমানে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
সোমবার সকাল ১০টা থেকে দিন ব্যাপী চৌমুহনী পৌর অডিটোরিয়াম হলে বেগমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের আয়োজনে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামছুল হক সামছুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন করায় গত ২রা জানুয়ারী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মামুনুর রশিদ কিরন এমপির স্বাক্ষরিত এক পত্রে বেগমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. এ বি এম জাফর উল্যাহ,সহ—সভাপতি মাহফুজুল হক বেলাল, সামসুল হক সামসু, যুগ্ম—সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন আজীম, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মোরশেদ আলম, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক মোশাররফ হোসেন, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ইমাম হোসেন রাজু, সাংগঠনিক সম্পাদক শরাফ উদ্দিন বাবু, সহ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এ বি এম ইউসুফ আশিক, চৌমুহনী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আক্তার হোসেন ফয়সল, সদস্য শাহজাহান সাজু, হায়দার জাফর হাবিব, মেহেদি হাসান টিপু ও দাউদ উল্যা হিল মজিদসহ ১৫জন শীষ র্নেতাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।সোমবার অনুষ্ঠিত বিশেষ বর্ধিত সভায় সেই সব নেতাদের নাম পাঠ করে শোনানোর পর সভায় সর্বসন্মতিক্রমে ওইসব নেতাদের অব্যাহতির সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আক্তারুজ্জামান আনছারীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আরো বক্তব্য রাখেন উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী এমপি পত্নি জেসমিন আক্তার, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও আওয়ামীলীগ নেতা নুর নবী টিপু, এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সহ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম স্বপন, জেলা আওয়ামীলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শেখ শহীদ, বেগমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ—সভাপতি শরীফুল ইসলাম, দুলাল মাস্টার, মাহবুবুর রহমান,শফিউল আজম পিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল হক খোরশেদ, দপ্তর সম্পাদক ইসমাইল মাস্টার, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক নুর উদ্দিন, ধর্ম মন্ত্রণালয় হিন্দু ধর্মীয় নোয়াখালীর ট্রাস্টি্র এডভোকেট পাপ্পু সাহা, পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক টিপু, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নুর হোসেন মাসুদ, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম রাতুল, সাধারণ সম্পাদক রাহাত চৌধুরী, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আবিদা সুলতানা উর্মি, জেলা পরিষদের সদস্য জহিরুল ইসলাম জহির, মহিলা সদস্য আশেয়া আক্তার সহ জেলা, উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দগন।
এ ব্যাপারে বেগমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযেদ্ধা ডা. এ বি এম জাফর উল্যাহ বলেন,আমাকে অব্যাহতি দেয়া বা বহিষ্কারের ক্ষমতা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক হিসেবে এমপি কিরনের নেই। তিনি বিগত ১০ বছরে এখানে দলকে পরিবারতন্ত্র বানিয়ে দলের ত্যাগি নেতা—কমীর্দের উপর হামলা—মামলাসহ বিভিন্নভাবে স্টি্রম রোলার চালিয়েছেন বিধায় নেতা—কমীর্দের সমর্থন হারিয়েছেন। কেন্দ্রের ঘোষনা অনুযায়ী আমরা নৌকার বিরুদ্ধে নয়,আমরা প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলের অধিকাংশ নেতাকমীর্ অবস্থান নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ—সভাপতি মিনহাজ আহম্মেদ জাবেদের ট্রাক মার্কা প্রতিকের নির্বাচন করেছি। আমি সভাপতি হয়েও জানিনা কে মিটিং করল,কখন করল, কাকে অব্যাহতি দিল? তিনি আরো বলেন, এখানে অযোগ্য লোককে প্রার্থী করা হয়েছে তাই আমিও দলের অধিকাংশ নেতাকমী ট্রাক মার্কার পক্ষে ভোট করেছি। আমরা নৌকার বিরুদ্ধে নয়, আমরা নৌকার মাঝির বিরুদ্ধে কথা বলেছি। তার বিভিন্ন অনিয়ম—দুনীর্তির বিরুদ্ধে আমরা কথা বলেছি। তার একনায়কতন্ত্রের কারনে বর্তমানে এখানে উপজেলা আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয় নেই,দলের মিটিং হয় তার ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে।
দলের তৃনমুলের একাধীক সুত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন থেকে বেগমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগে গ্রুপিং ও কোন্দল চলে আসলেও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, লিখিত বিবৃতি দিয়ে একে অপরকে বহিস্কার ও অবাঞ্চিত ঘোষনায় দলের তৃনমুলের নেতা—কমীর্দের মাঝে বর্তমানে হতাশা দেখা দিয়েছে। উল্লেখ্য, বেগমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সর্বশেষ সন্মেলন হয়েছে বিগত ২০১৯ সালে।
Leave a Reply